মেহেরপুর প্রতিনিধি-
রমজান মাস এলেই সেহরির সময় মেহেরপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের দেখা যায় মধ্যবয়সী নূর নাহার। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে রোগীদের ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। এরপর সেহরির জন্য নিজের হাতে খাবার দেন রোগী ও তার স্বজনদের।
নূর নাহার মেহেরপুর শহরের ওয়াপদা পাড়ার বাসিন্দা। তিন বছর আগে ছেলে মারা যান। এরপর তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় তিনি ব্যতিক্রমী এই কাজ বেছে নেন।
টানা তিন রমজান তিনি এভাবে শেষরাতে সেহেরি দিচ্ছেন।খাবারের মেন্যুতে সাদা ভাতের কোনো দিন ডাল, ডিম, সবজি, কোনো দিন মাছ কিংবা মাংস থাকে।
হাসপাতলের রোগী ও তাদের স্বজনেরা জানান, প্রতিদিন বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার এনে নূর নাহার সেহরি খাওয়ান। সন্ধ্যা রাতেই হাসপাতাল খাবার দিয়ে যায়। শেষ রাত পর্যন্ত সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। তাই রমজানে বেশিরভাগ রোগী ও তাদের স্বজনদের ভরসা নূর নাহারের সেহরি।
নূর নাহারের এই উদ্যোগে স্থানীয় কয়েকজন বিভিন্নভাবে সহযোগী করে থাকেন বলে জানা গেছে।
তিন দিন ধরে দুই ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে আছেন সদর উপজেলার আলমপুর গ্রামের গৃহবধূ বলেন, নূর নাহারের সেহরি নিয়ে ফেরার সময় তিনি জানান, প্রথম রোজা থেকে নূর নাহার নামের এক নারী তাদের সেহরি খাওয়াচ্ছেন। এতে করে তারা ভালোভাবে রোজা রাখতে পারছেন।
জানা গেছে, হাসপাতালে সেহরি দিতে তাকে সাহায্য করেন কয়েকজন। প্রতিদিন ৮০ থেকে ১২০ জনের মাঝে সেহরি বিতরণ করা হয়। ভাত, মাছ, মাংস ও ডিম তরকারির এই সেহেরি বিনামূল্যে দেয়া হয়।
তার এ কাজের বিষয়ে নূর নাহার বলেন, ‘আমার ছেলে মারা গেছে। ওর জন্যই আমি তিন বছর ধরে মানুষকে সেহেরি খাওয়াচ্ছি। যতদিন বাঁচব, এটি করে যাব। সবাই দোয়া করলে আল্লাহ আমার ছেলেকে মাফ করে দিবেন।
Author: মানবসেবা
Related Posts
Some simillar article from this label, you might also like
- Blog Comments
- Facebook Comments