আল্লাহ মাকে ফেরত পাঠাও। ছোট বোন কাঁদে, বাবা কাঁদে আমিও কাঁদি। মাকে সাদা কাপড়ে জড়িয়ে তোমার কাছে ঘুমাতে পাঠিয়েছিলাম। মাকে ছাড়া কারও ভাল লাগে না। মাকে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দাও।’
এ করুণ আর্তি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত ব্যাংক কর্মকর্তা ফারজানা আক্তারের (৩৪) সাড়ে তিন বছর বয়সি ছেলে ইলতেমিনের।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে ফারজানা আক্তারের খালা রেনু বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘দু’হাত তুলে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করে ইলতেমিনের মুখে এ সব কথা শুনে কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছে না। মায়ের মৃত্যুর পর দু’একদিন কিছু না বুঝলেও এখন ওরা মাকে খুঁজে বেড়ায়। কেমন চুপচাপ হয়ে গেছে। কীভাবে মাকে ছাড়া এ ছোট্ট শিশু দুটি জীবন কাটাবে তা ভেবে আমরা উদ্বিগ্ন।’
ভাগ্নির মৃত্যু সংবাদ শুনে রেনু বেগম সৈয়দপুর থেকে ছুটে আসেন। লাশ দাফন করতে চট্টগ্রামের হালিশহরও গিয়েছিলেন। সেখানে যারাই লাশ দেখতে এসেছেন তারাই ফারজানার এহেন মৃত্যুতে চোখের পানি ফেলেছেন। সাড়ে তিন বছর বয়সি ও আট মাস বয়সি মেয়েকে দেখে তারা বুকে টেনে নিয়েছেন। স্ত্রী হারিয়ে পাগলপ্রায় স্বামী সাব্বির হাসান পল্লব ছেলেমেয়েকে সঙ্গ দিতে সারাক্ষণ পরিবাগের বাসাতেই থাকছেন।
উল্লেখ্য গত শনিবার রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বাংলামোটরের সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা ফারজানা আক্তারের অকাল মৃত্যু হয়।
একজন সুস্থ মানুষের দেহে রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ সর্বনিম্ন দেড় লাখ থেকে সাড়ে ৪ লাখ থাকলেও ফারজানা আক্তারের রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে আসে। ফলে হার্ট ও কিডনিতেও সমস্যা দেখা দেয়।
তরিকুল হুদা হিলটন নামে ফারজানার এক আত্মীয় জানান, রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে যাওয়ায় স্বজনরা তাকে বাঁচাতে মোট ১২ ব্যাগ ব্লাড দেন। কিন্তু তবুও তাকে বাঁচানো যায়নি।
Author: মানবসেবা
Related Posts
Some simillar article from this label, you might also like
- Blog Comments
- Facebook Comments