শিক্ষার্থীদের আবেগের বাস্তব কারণ আছে: কাদের

বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় গত দুদিন ধরে রাজধানীতে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী সড়ক আটকে যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তাদের ‘আবেগের’ পেছনে ‘বাস্তব কারণ’ আছে বলেই মনে করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রধানমন্ত্রী এবার নিজেই উদ্যোগ নিয়েছেন এবং সড়ক পরিবহন আইন পাস হলে লাগাম টেনে ধরার জন্য আরও ‘কঠিন পদক্ষেপ’ নেওয়া সম্ভব হবে।

বুধবার সেতুভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে কাদের বলেন, “কালকে তো আসলে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা রাস্তায় বেরিয়েছিল। তাদের প্রচণ্ড ইমোশন কাজ করছিল, তার বাস্তব কারণও ছিল।

“দুইজন সম্ভাবনাময় ছাত্র রাস্তায় মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়েছে। সেটার প্রতিবাদে এমন বিক্ষোভ অনৈতিক বলে আমি মনে করি না। কারণ এ ধরণের বিক্ষোভ হতেই পারে।”

রোববার জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর গত তিন দিন ধরেই রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে।

এই বিক্ষোভের মধ্যে যানবাহনে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। পুরো শহরের পরিবহন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় ভুগতে হচ্ছে চলতি পথের যাত্রীদের। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবির সঙ্গে অনেকেই সংহতি জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।

এদিকে পরিবহন চালকদের বেপরোয়া চালনার জন্য অভিযোগের আঙুল উঠেছে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের দিকেও, যিনি পরিবহন শ্রমিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি।

ওই দুর্ঘটনার পরদিন থেকে ঢাকার রাস্তায় নগর পরিবহনের বাস কম থাকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে, দোষী চালকদের দায় এড়াতে বাস না নামিয়ে মালিকরা নগরবাসীকে জিম্মি করতে চাইছেন।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিক্ষোভে গাড়ি পুড়িয়ে ফেলবে বা ভাঙচুর করবে- এই ভীতি থেকে গাড়ির মালিকরা গাড়ি বের করেনি। গাড়ির মালিকদের এই ভীতিটা থাকতেই পারে।… আমার মনে হয় এই ভীতিটা কেটে যাবে। আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”

সদকে নৈরাজ্য তৈরি হয়েছে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, এক সময় বাস টার্মিনালগুলোতে মারামারি খুনোখুনি ছিল ‘নিত্য দিনের ঘটনা’।

“আমাদের সরকারের সময় কিন্তু নৈরাজ্য হয়নি। যেভাবে ধর্মঘটের কথা ছিল- হয়নি, শুধুমাত্র চট্টগ্রামে একটা ধর্মঘট হয়েছিল, যেটা অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর ছিল।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “এখন নৈরাজ্য হয়নি, তবে বিশৃঙ্খলা টার্মিনালে আছে, সড়কেও আছে। এটা তো আমি অস্বীকার করি না। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি আইন খুব জরুরি ছিল। সে আইনটা আশা করি পাস হয়ে যাবে। তারপর এখানে আমরা লাগাম টেনে ধরার জন্য কিছু বাস্তব ও কঠিন পদক্ষেপ নিতে পারব।”

SHARE THIS
Previous Post
Next Post