16 SEPTEMBER 2018
জেলা প্রতিনিধি
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। রেকর্ড সংখ্যক আবেদন হওয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।১২ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ করা হবে এবার।
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী মোট ২৪ লাখ ১ হাজার ৫৯৭টি আবেদন জমা পড়ে।
তবে পদের বিপরীতে ২০০’র অধিক প্রার্থী আবেদন করায় এ নিয়ে বিপত্তির মুখে পড়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ফলে কথা থাকলেও চলতি মাসে এ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। আগামী নভেম্বরে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানা গেছে।
এবছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগ্যতা হিসেবে পুরুষ প্রার্থীর ক্ষেত্রে ডিগ্রি/ স্নাতক এবং নারী প্রার্থীর ক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প-৪ (পিইডিপি-৪) আওতাভুক্ত ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত ৩০ জুলাই ‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮’ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ৩০ আগস্ট অনলাইনে আবেদন কার্যক্রম শেষ হয়। যাতে সারাদেশ থেকে মোট ২৪ লাখ ১ হাজার ৫৯৭টি আবেদন জমা পড়ে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি ২০১৬-১৭ জরিপ বলছে, উচ্চমাধ্যমিক পাস তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি, প্রায় ১৫ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ৬ লাখ ৩৮ হাজার তরুণ-তরুণী কোনো কাজ পাননি। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে ৪ লাখ ৫ হাজার লোক এখনো পছন্দ অনুযায়ী কাজ পাননি। স্নাতক ডিগ্রিধারীদের মধ্যে বেকারত্বের হার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, ১১.২ শতাংশ।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিয়োগে বিষয়ে অনুষ্ঠিত সভায় অধিক সংখ্যক আবেদনের বিষয়টি উঠে আসে। মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান সক্ষমতার বেশি আবেদন হওয়ায় অক্টোবরের শেষ নাগাদ পূর্ব ঘোষিত সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠান সম্ভব নয় বলে কর্মকর্তারা একমত পোষণ করেন।
ওই সভায় প্রাথমিকভাবে আগামী নভেম্বর মাসে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য সময় ধরে পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানো, নিয়োগ পরীক্ষার ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় উপস্থিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এফ এম মনজুর কাদির জানান, ওই বৈঠকে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে সার্বিক বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
যেহেতু এবার ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২৪ লাখের বেশি প্রার্থী আবেদন জমা পড়েছে তাই ঝামেলা অনেক বেশি। সার্বিক বিবেচনায় অক্টোবরে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাবনা থাকলেও তা পিছিয়ে আগামী মাসকে (নভেম্বর) সম্ভাব্য সময় হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ নাগাদ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৪ হাজার ৮২০টি। ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন হলে শিক্ষক সঙ্কট অনেকটাই কমে যাবে এসব বিদ্যালয়ে। নিয়োগ পরীক্ষা ত্রুটিমুক্ত করতে বিদ্যমান পরীক্ষা পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই মন্ত্রণালয়ের সভায় এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বলছেন, শিক্ষাখাতের বিভিন্ন সমস্যা তথা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও, সরকারিকরণ, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে সরকারের বিশেষ নজর রয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনী বছর হওয়ায় সবাইকে খুশি করার একটি ব্যাপার রয়েছে। তাই প্রাথমিক শিক্ষাখাতে বিশাল এ নিয়োগটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এ বিবেচনায় নভেম্বরে পরীক্ষাটি অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে তাদের ধারণা নিয়োগ পরীক্ষা যেহেতু পিছিয়েছে তাই উত্তীর্ণদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হতে নতুন বছরে গড়াতে পারে।
সুত্র,,,জুমবাংলানিউজ/এসএস
Author: Ahmed sufi
Related Posts
Some simillar article from this label, you might also like
- Blog Comments
- Facebook Comments