তরুণীকে দুই দিন আটকে দুই পুলিশের ধর্ষণ


সেকেন্দার হোসেন। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই)। জনগণের রক্ষক হয়েও এক তরুণীকে দুই দিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। শুধু এসআই সেকেন্দারই নন, এ ধর্ষণপ্রক্রিয়ায় তাঁর সঙ্গী ছিলেন একই থানার আরেক এসআই মাজহারুল ইসলাম। শুধু কী ধর্ষণ! ধর্ষণের সময় অস্ত্র ঠেকিয়ে ওই তরুণীকে ইয়াবা ট্যাবলেট সেবনেও বাধ্য করা হয়েছে। ২০ বছর বয়সী ওই তরুণী উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির ছাত্রী। এরই মধ্যে এ ঘটনায় সাটুরিয়া থানার অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করার কথা জানিয়েছেন মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম। এর আগে গতকাল রবিবার সকালে ওই তরুণী মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশের এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই নৈতিক স্খলনজনিত নানা অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগপত্র ও ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্পর্কে ওই তরুণীর এক খালা সাটুরিয়া থানার এসআই সেকেন্দার হোসেনের কাছে জমি বিক্রির তিন লাখ টাকা পাওনা ছিলেন। পাওনা টাকা নিতে সাভারের নবীনগর থেকে গত বুধবার বিকেল ৫টার দিকে খালার সঙ্গে ওই তরুণী সাটুরিয়া থানায় যায়। সেখানে এসআই সেকেন্দারের সঙ্গে তাদের দেখা হয়। পরে সেকেন্দার তাদের দুজনকে সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে সেখানে উপস্থিত হন সাটুরিয়া থানার এসআই মাজহারুল ইসলাম। পরে দুজন মিলে অভিযুক্ত তরুণী ও তার খালাকে আলাদা কক্ষে আটকে রাখে। একপর্যায়ে ওই তরুণীকে অস্ত্রের মুখে ইয়াবা ট্যাবলেট সেবনে বাধ্য করা হয়। পরে দুই রাত আটকে রেখে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে দুই এসআই। দুই দিন পর গত শুক্রবার সকালে খালাসহ ওই তরুণীকে ডাকবাংলো থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
গতকাল রবিবার ওই তরুণী মর্মস্পর্শী এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার খোঁজখবর নিয়ে অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই সেকেন্দার হোসেনের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি থানা থেকে প্রত্যাহারের বিষয়টি স্বীকার করলেও কী কারণে করা হয়েছে সে ব্যাপারটি এড়িয়ে যান। এদিকে এসআই মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম দুই কর্মকর্তাকে থানা থেকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শ্যামনগরে ধর্ষণের অভিযোগে ইউএনওর গাড়িচালক আটক
এদিকে শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি জানান, শ্যামনগর সরকারি মহসিন ডিগ্রি কলেজের বাক্প্রতিবন্ধী এক ছাত্রীকে (১৯) ধর্ষণের মামলায় স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িচালক আব্দুল গফফার গাইনকে আটক করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে উপজেলা প্রশাসন চত্বর থেকে তাকে আটক করা হয়। সে বাদঘাটা গ্রামের মৃত গহর আলী গাইনের ছেলে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা শ্যামনগর থানায় মামলা করেছেন।
পুলিশ ও ধর্ষিতার মা জানান, মেয়েসহ তারা গফফার ড্রাইভারের বাড়িতে থাকে। গত শনিবার দুপুরের মেয়েটি দুপুরের খাবার নিয়ে উপজেলা চত্বরের ভেতরে গফফার ড্রাইভারের কোয়ার্টারে যায়। সেখানে একা পেয়ে গফফার মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। পরে মেয়েটি এ ঘটনা মাকে জানালে তিনি পুলিশকে অবহিত করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গফফারকে আটক করে।
শ্যামনগর থানার ওসি হাবিল হোসেন বলেন, নির্যাতিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষক আব্দুল গফফারকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
সংগৃহিত :
http://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2019/02/11/735910?fbclid=IwAR3Y54OnK_NnCBs3fy-C2IRXYiCZba-MBHA1KeSw6SM6m7H7hnoF2Mio1xE

SHARE THIS
Previous Post
Next Post