দিয়ার মাথায় ছিল- অন্যদিনের মতো দিয়া যখন বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তখন তার হাতে ছিল একটি বাহারি রঙের ছাতা। রোদ/বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য তার মা ছাতাটি দিয়েছিলেন। কথাগুলো বলছিলেন দিয়ার সহপাঠী তিশা।
তিনি বলেন, যখন গাড়িটি দ্রুতবেগে এসে স্টুডেন্টদের চাপা দেয়, তখন রক্তাক্ত দিয়ার নিথর দেহ ফ্লাইওভারের গা ঘেষে পড়ে যায়, পাশেই পড়েছিল সেই ছাতাটি। অন্যদিকে নাড়িভুড়ি বের হয়ে যায় নিহত করিমের।
এভাবেই বাসচাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী- দিয়া আখতার মিম (১৭) এবং আবদুল করিমের (১৮) মর্মান্তিক মৃত্যুর বর্ণনা দিচ্ছিলেন একই কলেজের শিক্ষার্থী তিশা।
দিয়ার মাথায় ছিল মায়ের দেয়া ছাতা !!
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হোটেল রেডিসনের বিপরীতে (এমইএস বাসস্ট্যান্ড) এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন আরও ১৪ জন যাদের দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মেয়ে দিয়ার মৃত্যুর খবর পেয়ে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ছুটে আসেন বাবা জাহাঙ্গীর ফকির। তিনি নিজেও পেশায় গাড়িচালক। ঢাকা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের একতা পরিবহনের ড্রাইভার জাহাঙ্গীর। রোববার ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু মেয়ের মৃত্যুসংবাদ তাকে টেনে আনে হাসপাতালে।
দিয়ার মাথায় ছিল মায়ের দেয়া ছাতা !!
দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর ফকির বলেন, ‘আমি একজন গাড়িচালক, একই সঙ্গে বাবাও। এভাবে যারা গাড়ি চালায় তাদর ফাঁসি হওয়া উচিত। যেসব মালিকরা এসব গাড়িচালক নিয়োগ দিয়েছে, সরকারের তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ঢাকায় গাড়ি চালায়, তারা অদক্ষ। এরা আগে সিএনজি অটোরিকশা চালাত। গাড়ির মালিকরা লাইসেন্স ছাড়াই এদের চালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।’
দিয়ার মাথায় ছিল মায়ের দেয়া ছাতা !!
জাহাঙ্গীর ফকিরের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে দিয়া দ্বিতীয়। তারা স্বপরিবারে মহাখালী দক্ষিণ পাড়ায় থাকেন।