আপাতত ঢাকাতেই হবে কাদেরের চিকিৎসা

জেলা প্রতিনিধি
 03 MARCH 2019


 বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে আপাতত সিঙ্গাপুরে না নিয়ে দেশেই তাকে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঢাকায় আসা তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোববার রাতে ওবায়দুল কাদেরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। পরে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সংবাদ মাধ্যমের সামনে সিদ্ধান্ত জানান বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া।

তিনি বলেন, “সকাল এবং দুপুরের চেয়ে এখনকার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। উনি চোখ খুলে তাকান, উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেন। উনাকে জিজ্ঞাসা করা হল পানি খাবেন কি না, উনি মাথা নেড়ে উত্তর দিয়েছেন এবং হাত পা নাড়ছেন। উনার প্রস্রাবও হচ্ছে। দুপুরের দিকে প্রস্রাব একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন প্রস্রাব হচ্ছে। ব্লাড প্রেশার অনেকটা স্টেবল হয়েছে।

“উনার অবস্থার উন্নতির ধারা যেহেতু অব্যাহত হয়েছে, সেহেতু সিঙ্গাপুরের টিমটার সাথে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আপাতত উনি এখানেই থাকবেন। পরবর্তীতে অবস্থার ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে দুই দেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে দেশেই চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, “সিঙ্গাপুরে নিতে হলে চার ঘণ্টা ফ্লাই করতে হবে। এয়ার এম্বুলেন্সে আইসিইউর পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নেই। তাই আমরা আপাতত তাকে সিঙ্গাপুরে নিচ্ছি না।”


তবে সিঙ্গাপুর থেকে যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এবং চিকিৎসকরা এসেছেন, তাদের সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ঢাকাতেই রাখা হচ্ছে বলে জানান সেলিম। 
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোববার ভোরে অুসস্থ হয়ে পড়লে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নিয়ে আসেন স্ত্রী ইশরাতুন্নেসা কাদের। এনজিওগ্রামে তিনটি রক্তনালীতে ব্লক ধরা পড়লে চিকিৎসকরা একটি অপসারণ করেন।

তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের কার্ডিওলজির অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান বিকালে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, অবস্থার সামান্য উন্নতি হওয়ায় ওবায়দুল কাদের ডাকে সাড়া দিয়ে চোখ মেলতে পারছেন।

তবে এখনও তার অবস্থা সঙ্কটজনক জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা পার হওয়ার আগে নিশ্চিত কিছু বলা সম্ভব না।

“আমরা আরও কিছুক্ষণ দেখব। হেমোডাইনামিক্যালি স্টেবিলিটি যদি কিছুক্ষণ থাকে, তাহলে আমাদের সিদ্ধান্ত দুটো হবে। আমরা মেডিকেল থেরাপি দিতে পারি অথবা ব্লকড থাকা অন্য নালীগুলো খুলে দিতে বাইপাস করতে পারি।”

সে সময় তিনি জানান, পথে কোনো জটিলতা দেখা দিলে তা সামাল দেওয়ার ব্যবস্থা যদি এয়ার অ্যাম্বুলেসে থাকে, দক্ষ চিকিৎসক ও কর্মী যদি সেখানে থাকে, কেবল তখনই ওবায়দুল কাদেরকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেবেন তারা।

এদিকে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছায়। ওবায়দুল কাদেরের পরিস্থিতি বুঝতে ঢাকায় নেমেই তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে যান। তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই ওবায়দুল কাদেরকে আপাতত না পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।



SHARE THIS
Previous Post
Next Post