এক পুকুরে ভেসে উঠল
চার কিশোরের মৃতদেহ
——
সবাই সাঁতার জানতো। তবুও পুকুরে গোসল করতে গিয়ে আর উঠতে পারেনি চাঁদপুরে হাজীগঞ্জ উপজেলার চার কিশোর। মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার পৌর এলাকার রান্ধনীমুড়া গ্রামের বৈষ্টের বাড়ীর দিঘিতে ভেসে উঠল চার কিশোরের মৃতদেহ। সোমবার বিকেল পর্যন্ত তাদের পুকুরে গোসল করতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা। সন্ধ্যার পর বাসায় না ফেরায় একে একে চার পরিবার দুরন্তপনা এই কিশোরদের খুঁজতে লাগলো। রাতে মাইকিংও করা হয়েছে। কিন্তু নিয়তির কি পরিহাস। ভোর রাতের সেহরী খাবারের পর চার পরিবারের নেমে এলো শোকের মাতম।
পুকুরে ভেসে উঠা চার কিশোর রান্ধুনীমুড়া শুকু কমিশনারের বাড়ির ওয়াসিমের প্রথম সংসারের ছেলে রাহুল (১২), দ্বিতীয় সংসারের ছেলে শামীম (১৩), আহছানের ছেলে রায়হান (১৩) ও নজরুল ইসলামের ছেলে লিয়ন (১২)। চার কিশোরের পরিবারের সবাই দিনমজুর। এতে মধ্যে রায়হান রান্ধুনীমুড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র।
সরজমিনে গিয়ে দেখা মিলল- কান্নার আহাজারি। চার পরিবারের আত্মীয়-স্বজনদের ভিড় এক এক করে বাড়ছে। চার কিশোর ও পরিবারের শোকের মাতম দেখতে কয়েক গ্রামের হাজারও মানুষের ভীড়। চার কিশোরের মধ্যে তিন কিশোরের ডান হাতে একটি করে স্পট রয়েছে। নাকে মুখে রক্ত ঝরছে।
প্রত্যÿদর্শীরা ধারণা করছেন, বৈষ্টের দিঘির পাড়ে বটগাছে একটি কালনাগীনী সাপ আছে। ওই সাপের দংশন হতে পারে।
‘কে আর আমাগো গাছের ডাব খাবে। গাছে উঠবে। কাকে আর বকা দিবো।- এভাবেই বিলাপ করতে করতে চিৎকার দিয়ে কান্না করছে রায়হানের মামা ফরিদ আহম্মেদ। রায়হানের মা হাছিনা বেগম বলেন, ‘সন্ধ্যার পর ছেলে বাসায় না ফেরায় খুঁজতে শুরু করি। সন্ধ্যায় ওই পুকুর পাড়ে লিয়নসহ দুইজনের জুতা ও জামা পড়ে থাকতে দেখি।’ রাহুলের মা রাবেয়া বেগম ও লিয়নের মা লাখি বেগম বলেন, ‘তারা সবাই সাঁতার জানতো।’
স্থানীয় সংবাদকর্মী এসএম মিরাজ মুন্সী বলেন, ‘একই বাড়ীর চার কিশোরের মৃত্যুতে শোকের মাতম বইছে।’
ওয়ার্ড কমিশনার মো. শুকু মিয়া বলেন, রাতে মাইকিং করা হয়। ভোরে ওই পুকুরে নামাজের জন্য অজু করতে গিয়ে মৃতদেহগুলো ভাসতে দেখে স্থানীয় এক বাসিন্দা।
ঘটনাস্থলে গিয়ে হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন মৃতদেহগুলোর সুরতাহাল রিপোর্ট তৈরি করেন। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহং জাবেদুল ইসলাম বলেন, সোমবার রাতে তাদের খোঁজ না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়। ভোরে তাদের লাশ পুকুরে ভেসে ওঠার খবর পাই।
----------------- সংগ্রহ
Author: মানবসেবা
Related Posts
Some simillar article from this label, you might also like
- Blog Comments
- Facebook Comments